সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: অতিরিক্ত বেতন ভাতা আদায়ের প্রতিবাদ করায় রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ সরকারি কলেজে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমাবেশস্থলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ১০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়।
সোমবার দুপুরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভর্তি ও পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত ফি আদায় ও বেতন বাড়ানোর প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালীন সময়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, হারাগাছ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কলেজটি সরকারি হওয়ার পরেও বেসরকারি নিয়মে ভর্তি, বেতন ও পরীক্ষার ফি আদায়সহ অন্যান্য ফি নিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসরকারি নিয়মে অতিরিক্ত ফি নেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে মিছিল শেষে শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশে মিলিত হন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১২টায় কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুস ছাত্তার সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমাবেশস্থলে যান।
সমাবেশ শেষ হলে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি শারাফাত হোসেন সোহাগ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাহমুদ আকাশের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আলী আহসান, হিসাব বিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইমরান কবির, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমতিয়াজ আহম্মেদসহ অন্তত ১০ আহত হয়। এ সময় অধ্যক্ষ আব্দুস ছাত্তার বাঁধা দিতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাকে লাঞ্চিত করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক আলী আহসান জানান, অধ্যক্ষ স্যার আমাদের সমাবেশস্থলে এসে দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন। আমরা খুশি হয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে একে অপরের সাথে মিস্টিমুখ করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এদিকে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের না জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমাবেশের ব্যানার তৈরি করেছিল। এনিয়ে আমরা কয়েকজন সেখানে তাদের কথা বলেছি। কারো সাথে আমাদের কোন হাতাহাতির ঘটনা ঘটেনি।
হারাগাছ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস ছাত্তার জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমি তাদের বাঁধা দিতে গিয়ে আঘাত পেয়েছি।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিফুজ্জামান বসুনিয়া জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমাবেশস্থলে ছাত্রলীগেরও সমাবেশ ছিল। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিষ্টি বিতরণ করতে গেলে সেখানে তাদের সাথে ছাত্রলীগের হাতাহাতি হয়েছে। অধ্যক্ষের রুমে আশ্রয় নেয়া আতঙ্কিত তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে আমরা পরিবারের কাছে দিয়েছি। এখন কলেজ ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
Leave a Reply